কড়া নিরাপত্তায় সিইসির এলাকায় ভোট - bncworldnews

কড়া নিরাপত্তায় সিইসির এলাকায় ভোট

 


সন্দ্বীপ উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নের সাতগরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢুকতেই কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য বাধা দেন। তাঁর এক জবাব প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি লাগবে। তাঁর পিছু পিছু প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে গেলাম।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সাজু রায় সন্দ্বীপ সরকারি কলেজের প্রভাষক। তিনি বললেন, ‘কঠোর একটা নির্বাচন হচ্ছে। দুই প্রার্থীর এজেন্ট রয়েছে। কোনো ধরনের কোনো চাপ নেই। ঘুরে দেখতে পারেন। তবে ক্যামেরা মুঠোফোনে কক্ষের ছবি তুলতে পারবেন না। নিষেধ রয়েছে।’

সারিকাইত এলাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের বাড়ি। তাঁর এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন। সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। শেষ হবে বিকেল চারটায়।

নির্বাচনে চার প্রার্থী রয়েছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের মাঈন উদ্দিন ওরফে মিশন, একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রফিকুল ইসলাম, জাসদের আবুল কাশেম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান। শেষ দুজন আনারস প্রতীকের রফিকুলকে সংবাদ সম্মেলন করে সমর্থন দিয়েছেন। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা এখন নৌকা ও আনারসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

সকাল থেকে ১২টি কেন্দ্র ঘুরে শুধু হারামিয়া ইউনিয়নের কাছিয়াপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আনারসের এজেন্ট পাওয়া যায়নি। অন্য সবগুলোতে দুই প্রার্থীর এজেন্ট ছিল। হারামিয়া এলাকার কেন্দ্রটি নৌকার প্রার্থীর বাড়ির পাশের। এখানে সকালে মাঈন উদ্দিন ভোট দেন।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রেজাউন নবী বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হচ্ছে।

মাইট ভাঙা সাউথ সন্দ্বীপ কলেজ কেন্দ্রে বেলা ১১টায় এক প্রতিবন্ধী ভোট দিতে আসেন। কক্ষে তাঁর ছবি তুলতে চাইলে বাধা দেন পুলিশ সদস্য মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কক্ষে ছবি তোলা নিষেধ রয়েছে। আমাদের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।’

পাশে দাঁড়ানো প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সাতটি কক্ষে দুই ঘণ্টায় শতাধিক ভোট পড়েছে। মোট ভোট ৩ হাজার ৪৫৪টি। শক্ত একটা নির্বাচন হচ্ছে। কোনো ধরনের কোনো চাপ নেই।’

নির্বাচনে সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জাল ভোট দিতে গিয়ে তিনজন আটক হয়েছেন। নির্বাচনে মোট ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন আরও একজন। র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

দু-একটি ছোটখাটো জাল ভোটের ঘটনা ছাড়া নির্বাচন কঠোর ও অবাধ বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। তবে ভোটার কম বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘জাল ভোট দিতে এসে আমার হাতে একজন ধরা পড়েছে। তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।’

হারামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকালে দেখা যায়, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে নির্বাচন চলছে। ভোটার ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। মুঠোফোন রেখে দেওয়া হচ্ছে।

বিদ্রোহী প্রার্থী রফিকুল ইসলামও কেন্দ্রের ভেতর তেমন কোনো সমস্যা নেই বলে জানান। তিনি বলেন, ‘বাইরে রাস্তায় ভোটারদের ঢুকতে বাধা দেয়। কিন্তু ভেতরে তেমন সমস্যা নেই।’

দু-একটি কেন্দ্রে আনারসের অনুসারীরা জাল ভোট দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন নৌকার প্রার্থী মাঈন উদ্দিন বলেন। ভেতরে বড় কোনো সমস্যা নেই, বলেন তিনি।  

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘দু-একটা জাল ভোটের অভিযোগ ছাড়া কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আশা করি শেষ পর্যন্ত এ রকমই থাকবে। সিইসি স্যারও চোখ রাখছেন এই নির্বাচনে। নির্বাচনের বিষয়ে তিনি খুব কঠোর।’




No comments

Powered by Blogger.